সরওয়ার আলম শাহীন, উখিয়া নিউজ ডটকম::
সারাদেশে জঙ্গি বিরোধী নানান প্রচার ও তৎপরতা চলমান থাকলেও উখিয়া-টেকনাফে অবস্থানকারী মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে এখনো গোপনে কাজ করে যাচ্ছে আলোচিত জঙ্গী সংগঠন ইত্তেহাদুল জামিয়াতুল ইসলাম।
সম্প্রতি এ সংগঠনের সভাপতি হাফেজ সালাউল ইসলাম সহ ৪ জন সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের শামলাপুরে গোপন বৈঠক করার সময় বিজিবি,র হাতে আটক হলেও বারবার প্রকাশ করা হচ্ছে তিনি (আরএসও) নেতা। ইত্তেহাদুল জামিয়া কর্মকান্ড চালালেও বারবার আরএসওর নাম চলে আসায় এ সংগঠনের নেতারা গোপনে তাদের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। সংগঠনের সভাপতি গ্রেফতারের পর রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরে সংগঠনটির অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের আনাগোনা বেড়েছে বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে।
সুত্র জানায়,কক্সবাজারের দুটি রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির ঘিরে চলছে নানামুখী দেশ বিরাধী কর্মকান্ড। সম্প্রতি গোপন বৈঠক করার সময় টেকনাফের শামলাপুরের একটি বাড়ী থেকে জঙ্গী নেতা ইত্তেহাদুল জামিয়াতুল ইসলামের সভাপতি হাফেজ সালাউল ইসলাম আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হন।হাফেজ সালাউল ইসলাম ইতিপূর্বেও গ্রেফতার হয়েছিল। ২০১৩ সালে কক্সবাজারে একটি মাদ্রাসায় গোপন বৈঠক করার সময় পুলিশের হাতে আটক হন তিনি।এছাড়াও ২০১৪ সালের ২৩ নবেম্বর চট্রগ্রাম শহরের একটি হোটেলে গোপন বৈঠক করার সময় পাকিস্তানী নাগরিক মোহাম্মদ আলম সহ গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। কিন্তু তিনি গ্রেফতার হওয়ার পর বারবার নাম আসে আরএসও নেতা হিসেবে। আসলে তিনি জঙ্গি সংগঠন ইত্তেহাদুল জামিয়াতুল ইসলামের সভাপতি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত জঙ্গি নেতা হাফেজ সালাউল ইসলামের সাথে আরো যেসব শীর্ষ জঙ্গি নেতা রোহিঙ্গা ক্যাম্পভিত্তিক জঙ্গি তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মধ্যে হাফেজ জাবের,হাফেজ মোহাম্মদ ইব্রাহিম,হাফেজ সালামত উল্লাহ,সেলিম শাহেদ, মোহাম্মদ ওয়াইস অন্যতম। এরা সবাই ইত্তেহাদুল জামিয়াতুল ইসলামের শীর্ষস্থানীয় নেতা। বিশেষ করে ইত্তেহাদুল জামিয়াতুল ইসলামের ছত্রছায়ায় রোহিঙ্গা রিফুউজি ভয়েস অব হিউম্যান রাইটস; সংক্ষেপে (জজঠঐজ) নামে একটি সংগঠন রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরকে জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিনত করেছে।ইতিপূর্বে এ সংগঠনের একাধিক নেতা গ্রেফতার হলেও জামিনে বেরিয়ে এসে পুরনায় গোপনে রোহিঙ্গাদের নিয়ে তাদের জঙ্গি কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন সুত্রে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে। এ সংগঠনের নেতা মৌলভী আবুল মনজুর, পিতা মোঃ জালাল, সাং কুতুপালং,অনরেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘোনা,মৌলভী জানি আলম,পিতা মৃত মৌলভী আবুল হোসেন, সাং কুতুপালং রেজিষ্টার্ড ক্যাম্প ব্লক অ/৩,মৌলভী হামিদ হোসেন,পিতা আলী হোসেন সাং কুতুপালং রেজিষ্টার্ড ক্যাম্প ও মৌলভী শফির ও নাম সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সমুহের হাতে রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে আন্তজার্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলো থেকে অর্থ এনে রোহিঙ্গাদের মাঝে বিতরনের অভিযোগও রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য,তুরস্ক,সৌদি আরব,সিরিয়ায় তাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলে একাধিক রোহিঙ্গা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন।এদিকে রোহিঙ্গা নেতা রাকিব উল্লাহ রাকিব জানান, শুধুমাত্র ইত্তেহাদুল জামিয়াতুল ইসলাম ও রোহিঙ্গা রিফুউজি ভয়েস অব হিউম্যান রাইটস নামের সংগঠন গুলো রোহিঙ্গাদের পুজি করে বাংলাদেশ বিরোধী একটি মিশন হাতে নিয়ে নেমেছে। তারা বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে জঙ্গি রাষ্ট্র বানাতে কোটি কোটি ডলার ব্যায় করে যাচ্ছে। সীমান্ত জনপদ উখিয়া টেকনাফের রেডিষ্টার্ড,আন-রেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরগুলোকে জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিনত করেছে।
সে আরো জানায়,কুতুপালং ও নয়াপাড়া ক্যাম্পে বেশ কয়েকটি মসজিদ,মাদ্রাসা নির্মান করা হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিক্তিক কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের অর্থায়নে। মসজিদ মাদ্রাসা গুলো মৌলভী মনজুর ও মৌলভী হামিদের তত্বাবধানে নির্মান করা হয়েছে। এছাড়াও রোহিঙ্গাদের মাঝে জঙ্গি সংগঠনগুলোর দেওয়া বিপুল পরিমান অর্থ বিতরন করতে ব্লক ভিক্তিক কমিটি করেছে জঙ্গি নেতারা।এদের মধ্যে রোহিঙ্গা নেতা হিসেবে আলোচনায় চলে এসেছেন আন-রেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গা আবু সিদ্দিক,মোহাম্মদ নুর, আব্দুল হাফেজ ও নুরুল আমিন। এ ব্যাপারে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ হাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,ক্যাম্প ভিত্তিক জঙ্গিদের ব্যাপারে প্রশাসন সজাগ রয়েছে,সুনিদ্দিষ্ট তথ্য পেলে জঙ্গিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তিনি এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
পাঠকের মতামত